মাধ্যমিক বাংলা প্রস্তুতি
ড. শ্রেয়সী গোস্বামী
সহকারী শিক্ষিকা বাল্মীকি বিদ্যাপীঠ (উঃ মাঃ)
মাধ্যমিক পরীক্ষার দামামা বেজে গেছে। সেই বুক দুক দুক দিনগুলো আসন্ন। সিরিয়াস পরীক্ষার্থী মাত্রেই সিলেবাস শেষ করে রিভিসনের তাড়াহুড়ো আর ফাঁকিবাজদের শেষ মুহূর্তের নাকানি চোবানি। যদিও আমি সবসময়েই ছিলাম সেই ফাঁকিবাজদের দলে। নাকানি চোবানি খেতে হয়েছিল আমাকেও শেষের দিনগুলোতে। তাই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে মনে রেখো নীচের কথাগুলি
১। এই শেষ দিনগুলোতে বাংলার যেসব টেক্সট গুলো গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো অন্তত একবার রিডিং পড়তে হবে। অনেক সময় প্রশ্নোত্তর পড়ার তাড়াহুড়োতে ছাত্রছাত্রীরা মূল টেক্সট- এর খুটিনাটি ভুলে যায় ফলে পরীক্ষার হলে মুখস্ত করা উত্তরগুলোতে কিছু অসঙ্গতি দেখা যায়। বেশি মুখস্ত করার প্রবণতা অনেক সময় ভালো ছাত্রের আসল ক্ষমতা নষ্ট করে। তাই মুখস্ত বা কণ্ঠস্থ নয় বুঝে পড়াগুলো আত্মস্থ করতে হবে।
২। গদ্য, পদ্য, প্রবন্ধ, নাটক এই চারটি অংশই সমান গুরুত্বপূর্ণ। গদ্য লেখককে লেখক, পদ্য লেখকে কবি, প্রবন্ধ লেখককে প্রাবন্ধিক এবং নাটক লেখককে নাট্যকার বিশেষণে চিহ্নিত করবে। এক্ষেত্রে অন্যথা হলে বিষয়টি খুব দৃষ্টিকটু দেখায়।
৩। ছোটো প্রশ্নগুলির ক্ষেত্রেও সব সময় পূর্ণ বাক্যে উত্তর লিখবে।
৪। পরীক্ষা হলে প্রশ্ন পত্রের নম্বরগুলো সচেতন ভাবে যথাযথ ব্যাবহার করবে।
৫। প্রশ্নবিচিত্রা গুলো থেকে প্রশ্ন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হবে। প্রশ্ন না দেখে শুধু পড়ে যাওয়া অর্থহীন। তাই কী ধরণের প্রশ্ন আসে বা আসতে পারে সেগুলো বুঝে নিয়ে পড়াশোনা করা প্রয়োজন। তবে সাজেসন ভিত্তিক পড়তে গিয়ে অতিরিক্ত বাদ দিয়ে ফেলাও বোকামি।
৬। ব্যাকরণের ক্ষেত্রে বিষয়গুলোকে বার বার পড়ে আত্মস্থ করা প্রয়োজনীয়। সঙ্গে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন ধরে বার বার অভ্যাস। অভ্যাস ও বিষয়ের আত্তীকরণে এই দুইয়ের সহাবস্থান না হলে ব্যাকরণের নম্বর পাওয়া অসম্ভব। তাই এই বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
৭। নির্মিতি পর্যায়ে নিজেদের সৃষ্টিশীলতার প্রয়োগ প্রয়োজন। মুখস্ত না করে কি কি পয়েন্ট লেখা আবশ্যিক বা লেখার বিধি জেনে বুঝে নিয়ে নিজের ভাষায় লেখা গুরুত্বপূর্ণ। এতে যেমন মুখস্ত করার চাপটা চলে যায়। তেমনি কমন না থাকার ভয় থেকে মুক্ত থাকা যায়। নিজের মতো করে গুছিয়ে লিখলে পয়েন্ট এবং বিধি ঠিক থাকলে নম্বর অবশ্যম্ভাবী।
৮। বানান সম্পর্কে সাবধানতাও গুরুত্বপূর্ণ। বানানে অসঙ্গতি ছাত্রছাত্রীর মান সম্পর্কে শিক্ষকে প্রশ্নশীল করে তোলে। তাই বানান অবশ্যই ঠিক লেখার চেষ্টা করতে হবে।
৯। হাতের লেখার জন্যে নম্বর বরাদ্দ থাকে না। বোধগম্য পরিস্কার হাতের লেখা গুরুত্বপূর্ণ।
১০। উত্তর পত্রের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা দরকার। এবং উত্তর লেখার সময় প্রশ্নপত্রে যে অনুসারে দেওয়া আছে সেই অনুসারে উত্তর লেখা ভালো। তাতে পরীক্ষকের পক্ষে উত্তরপত্র পরীক্ষা করা সহজ হয় এবং ছাত্রছাত্রীদের উত্তরপত্র পরীক্ষকের কাছে স্বচ্ছ এবং পরিচ্ছন্নতার বার্তা পৌঁছে দেয়।
১১। অযথা কঠিন ভাষা ব্যবহার করলে নম্বর ভালো উঠবে এরকম ভাবনা বোকামো। সহজ সরল নির্মেদ ভাষাই কাম্য।
১২। প্রশ্নের মান দেখে বা নির্দেশ অনু্যায়ী উত্তর লিখবে। অযথা বড় উত্তর লেখা বা একট্রা শিট নিয়ে উত্তর লিখলে বেশী নম্বর পাওয়া যায় এই ধারণা ভ্রান্ত। যেটুকু চাওয়া হয়েছে সেটুকু তথ্য উত্তরে থাকলেই সম্পূর্ণ নম্বর পাওয়া যাবে।
Post a Comment